শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা ও জ্বালাপোড়া দূর করতে ১২টি খাবার খান - বি পি আর সি

 

শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা ও জ্বালাপোড়া দূর করতে ১২টি খাবার খান


ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ মানব শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি হলো মানব শরীর সঠিকভাবে কাজ না করার ইঙ্গিত বহন করে। প্রদাহ মানব শরীরে কোনো আঘাতের প্রত্যুত্তরে শরীরের কোষগুলোর ক্ষতি রোধ করার একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত প্রদাহ প্রচন্ড ব্যথার বা অন্যান্য অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে। কোনো অস্বাভাবিক কারণে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রদাহ ঘটলে তা আমাদের জন্য ক্ষতিকর।

গবেষণায় দেখা গেছে কিছু খাবার আছে যেগুলো শরীরের বিভিন্ন ধরণের মাত্রাতিরিক্ত প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেই এই খাবারগুলো সম্পর্কে।

১। সবুজ শাক: সাধারণত গাঢ় সবুজ রঙের শাকগুলো অত্যন্ত পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ। নিয়মিত সবুজ শাক খেলে প্রদাহ জনিত রোগের ঝুঁকি কমতে পারে।

২। আঁশযুক্ত খাবার: বিভিন্ন ধরণের ডাল, মটরশুঁটি, আঁশযুক্ত নানান ফলমূল শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জ্বালাপোড়া ও ব্যথা কমায় বলে ধারণা করা হয়। এ ধরণের খাবারগুলো সহজলভ্য বলে নিয়মিত এই খাবারগুলো খেয়ে প্রদাহের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

৩। অলিভ অয়েল: এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর চর্বির মধ্যে অন্যতম। হৃদরোগ, ব্রেন ক্যান্সার সহ আরো মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে অলিভ অয়েল। অলিভ অয়েলে রয়েছে ওলিওক্যানথাল নামে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা প্রদাহ রোধে ভূমিকা রাখতে পারে।

৪। টমেটো: টমেটো প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে রয়েছে বিশাল পরিমাণে ভিটামিন সি, পটাসিয়াম ও লাইকোপেন নামে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই পুষ্টিউপাদানগুলো প্রদাহ রোধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারে প্রতিরোধেও কার্যকরী বলে ধারণা করা হয়।

৫। হলুদ: বাত, ডায়বেটিস ও অন্যান্য অসুখের সাথে সম্পর্কিত প্রদাহ রোধে হলুদ অত্যন্ত কার্যকরী। হলুদে থাকা কারকিউমিন একটি অত্যন্ত শক্তিশালী প্রদাহরোধী উপাদান। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে হলুদ ও কালো মরিচ একসাথে খেলে প্রদাহের বিরুদ্ধে আরো কার্যকরী ফল পাওয়া যায়।

৬। আদা: প্রাচীনকাল থেকেই ওষধি উদ্ভিদ হিসেবে আদা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আদা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে শরীরের বিভিন্ন সন্ধিস্থলে ব্যথা কমাতে আদা ভূমিকা রাখতে পারে।

৭। মরিচ: মরিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা প্রদাহ রোধে অত্যন্ত কার্যকরী। ক্যাপসিকামেও প্রদাহ প্রতিরোধী এসকল উপাদান রয়েছে।

৮। তৈলাক্ত মাছ: সবধরণের মাছেই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকলেও, তৈলাক্ত মাছগুলোতে প্রচুর পরিমানে ওমেগা-৩, বিশেষ করে ইপিএ ও ডিএইচএ থাকে। ইপিএ ও ডিএইচএ প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও কিডনির অসুখের মতো মারাত্মক ব্যাধি প্রতিহত করতে সাহায্য করে।

৯। আঙুর: আঙুরে আছে এন্থোসায়ানিন ও রেসভেরাট্রল, এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম হলো প্রদাহ দূর করা। বিশেষ করে হৃদযন্ত্রের নানান প্রদাহ রোধে আঙুর বিশেষ কার্যকরী।

১০। আম: আমে রয়েছে পলিফেনল নামে একটি উপাদান যা স্তন ক্যান্সার ও ক্যান্সার জনিত প্রদাহ রোধ করতে পারে। এছাড়াও গ্রীষ্মকালীন এই ফলটি প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

১১। গ্রিন টি: গ্রিন টি অন্যতম স্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। গবেষণায় হৃদরোগ, ক্যান্সার, আলঝাইমার ডিজিজ, স্থুলতা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে গ্রিন টির কার্যকরী ভূমিকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গ্রিন টিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষের সুরক্ষায় বিশেষভাবে কাজ করে এবং প্রদাহের সম্ভাবনা কমায়।

১২। ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে প্রচুর জরুরি পুষ্টি উপাদান আছে। নানান ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে ডার্ক চকলেট। এতে রয়েছে ফ্ল্যাভানলস নামে একটি উপাদান যা শরীরের কিছু কোষের সুরক্ষায় কার্যকরী।

প্রফেসর ডাঃ মোঃ আবু সালেহ আলমগীর

বিপিটি, এম ডি, এ্ম পি এইচ, এ ডি এম আর, পি এইচ ডি

কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান

ফিজিওথেরাপি মেডিসিন এন্ড রি-হ্যাবিলিটেশন বিভাগ

সাফা-মারওয়া হাসপাতাল লিঃ, যাএাবাড়ী মোড়, যাএাবাড়ী, ঢাকা

মোবাইলঃ০১৬৪১৫৭৬৭৮৭, ০১৭৩৮৩৯৪৩০৯

Comments

Popular posts from this blog

Prof. Dr. Md. Abu Saleh Alamgir. BPT, MD, MPH, MDMR, PhD. Physiotherapy Medicine & Rehabilitation Consultant

ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা, অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা এবং স্পিচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি চিকিৎসার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা- বি পি আর সি

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবু সালেহ আলমগীর। বি পি টি, এম ডি, এম পি এইচ, এম ডি এম আর, পি এইচ ডি - বি পি আর সি