বাংলাদেশীদের জন্য ওজন কমানোর ডায়েট প্লান - বি পি আর সি

 বাংলাদেশীদের জন্য ওজন কমানোর ডায়েট প্লান

মেদ ভুড়ি কমানো বা ওজন নিয়ন্ত্রণের সঠিক উপায় আসলে ভালো খাদ্যাভাস গড়ে তোলা। চলুন আমরা একটি ডায়েট প্ল্যান দেখি যা দীর্ঘ মেয়াদে ওজন কমিয়ে মেদ-ভুড়ি দুর করবে। এই প্ল্যানটি অনুসরন করা খুবই সহজ হবে এবং এটি সেভাবেই প্রস্তুত করা হয়েছে। এই প্ল্যানটি অনুসরন করলে আপনার ক্ষুধাও মিটবে ওজনও কমবে কিন্তু এটি আপনাকে দৗর্ঘমেয়াদে অভ্যাস বা প্রাকটিস করতে হবে । আগেই বলেছি ওজন ভাল রাখতে খাদ্যাভাসের কোন বিকল্প নেই। আর একটি বিষয় চটকদার বা ম্যাজিক্যাল কোন ফর্মুলায় বিশ্বাস করবেন না। ওগুলো স্বল্প মেয়াদে কিছু কাজ করলেও কিছুদিনের মধ্যেই বুঝতে পারবেন ওগুলো আসলে ভুয়া ।

1. সকাল ৭টা ঘুম থেকে উঠেই :

এক চা চামচ খাটি মধু ও এক ফালি লেবু মেশানো হালকা কুসুম গরম পানি এক গ্লাস। এটা খেয়েই স্বাভাবিক কাজকর্ম বা ব্যায়াম করতে পারেন।

2. সকাল ৮টা ব্রেকফাস্ট বা নাস্তা:

এক প্লেট ভাত অথবা দুটি ছোট সাইজ রুটি এবং সবজি এক বাটি এবং একটি ডিম একটি আপেল বা কলা বা এজাতীয় ফল। খেয়াল করুন রাতে রুটি খেলে সকালে ভাত খাবেন। রাতে ভাত খেলে সকালে রুটি খাবেন। সবজি হিসেবে যদি লাউ বা পেপে বা চালকুমড়া নেন তাহলে সবজি একটু বেশী খেলে সমস্যা নেই। সিম বা ঢেড়স বা বরবটি জাতীয় সবজি এক বাটি খেতে পারেন কিন্তু সবজি আলু দিয়ে রান্না না করলে ভাল হয়।

3. বেলা ১১ টা হালকা নাস্তা ও স্ন্যাকস :

নাস্তা হিসেবে বাড়িতে বানানো সবজি রোল বা এক স্লাইস পাউরুটি বা কম ক্যালোরি সমৃদ্ধ টোস্ট যদি পাওয়া যায় বা হালকা কিছু খেয়ে নিন। সাথে অবশ্যই এক কাপ গ্রিন টি বা সবুজ চা। ফাস্ট ফুড বা মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার বর্জনীয়।

4. দুপুর ১ টা লাঞ্চ বা মধ্যাহ্নভোজন:

এক বা দেড় প্লেট ভাত ২ টুকরা মাছের ঝোল অথবা মুরগীর মাংস (চিকেন হলে ভাল হয় চর্বি বিহীন অন্য মাংসও খাওয়া যায়)। সাথে অড়হর বা মুগ ডাল । সাথে সালাদ এক বাটি অথবা একটি শসা বা গাজর । সবজি ভাজি আধা বাটি। খাবার আস্তে আস্তে ভাল করে চিবিয়ে খান। সময় নিয়ে খান।

5. বিকাল ৪টা ৩০ হালকা নাস্তা:

সবজি দিয়ে বানানো নাস্তা বা অল্প একটু মুড়ি বা চিড়া বা খই । সাথে অবশ্যই টক দই ও কলা দিয়ে বানানো লাচ্ছি। লাচ্ছিতে চিনি দেয়া যাবেনা। হালকা গুল মরিচের গুড়া দেয়া যেতে পারে। লাচ্ছি হিসেবে না খেলেও টক দই খেতে হবে এক্ষেত্রে চিড়া দিয়ে খেতে পারেন।

6. রাত ৮ টা ডিনার বা নৈশভোজ:

১ প্লেট ভাত বা ১ টা রুটি সাথে অবশ্যই শাক ভাজি বা ঝোল। পুইশাক বা পালংশাক বা লালশাক এগুলো সবচেয়ে ভালো। মাছ খেতে পারেন ২ টুকরো । হালকা সবজির ঝোল পাতে নিতে পারেন।

খেয়াল করুন কয়েকটি টিপস

প্রথমত মাংসের চেয়ে মাছের অগ্রাধিকার বেশী

দ্বিতীয়ত ভাত বা রুটি বা লুচি বা পরোটা এরকম শর্করা জাতীয় খাবার আপনি আরো বেশী খেতে পারেন, যদি আপনি পর্যাপ্ত ব্যায়াম বা পরিশ্রমের কাজ করতে পারেন। আপনার দেহের শ্রমের সাথে এজাতীয় খাবার সমন্বয় করে কম- বেশী করা যেতে পারে।

তৃতীয়ত আপনার বেশী খাওয়ার প্রবণতা থাকলে পেপে বা চালকুমড়া বা লাউ এরকম সবজির ঝোল বেশী করে রান্না করে পাতে বেশী করে নিয়ে ভাত বা রুটির উপর নির্ভরতা কমাতে পারেন। অথবা খাওয়ার আগে পানি খেতে পারেন অথবা প্রথমে পাতে খুবই পাতলা করে রান্না করা ডাল আগে একবাটি চুমুক দিয়ে খেতে পারেন।

চতুর্থত খাবারের আকাঙ্খাকে দমাবেন না । প্রয়োজনে বেশী খেয়ে বেশী ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম করুন। এক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করুন। নিতান্তই খেতে ইচ্ছে করলে কম-ক্যালরি আছে এমন খাবার খান।

পঞ্চমত নাস্তায় ফলমুল খেতে পারেন পর্যাপ্ত অনেক ফল আছে যা ওজন কমাতে সহায়ক।

একজন সুস্থ স্বাভাবিক নারী বা পুরষের কমপক্ষে ১২০০ হতে ১৮০০ ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার দৈনিক দরকার। আরেকটি পয়েন্ট- ওজন একবার নিয়ন্ত্রণে এলে সে ওজন ধরে রাখার কৌশল অবলম্বন করবেন। আপনি ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবারগুলো (ভাত বা রুটি বা লুচি বা পরোটা- এছাড়া সবজি বা ফলেও অল্প করে ক্যালরি থাকে) আপনার শারীরিক নড়াচড়া বা ব্যায়াম বা পরিশ্রমের সাথে এডজাস্ট বা সমন্বয় করে নিবেন। এটিই বেশী সহজ ও কার্যকরী। আপনি কিছুদিন এই ছকটি অনুসরন করলেই ফল পাবেন এবং এটি নিজের মত করে সাজিয়ে নিতে পারবেন। আর কখনও হতাশ হবেন না । ভাল থাকবেন।

(এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন ডায়েট প্ল্যান আর ডায়েট চার্ট এক জিনিস নয় । একজনের ডায়েট চার্ট আরেকজনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না। তাই এক্সাক্টলি কোন ব্যক্তির একেবারে নিজস্ব ডায়েট প্ল্যান এর প্রয়োজন হলে ডায়েটিশিয়ান এর সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

আপনার বা আপনার পরিবারের যে কারও যে কোন প্রকারের বাত-ব্যথা, আর্থ্রাইটিজ, প্যারালাইসিস, ব্যাক-পেইন বা ঘাড়, পিঠ, কোমড়, নিতম্ব ও লেজের ব্যথা, কাধ, কনুই, কব্জি, কুচকি, হাটু ও পায়ের গোড়ালীর ব্যথা, নতুন, পুরাতন ও দীর্ঘ মেয়াদি ব্যথা, মাংশপেশীর শক্তি কমে যাওয়া বা দুর্বল হয়ে যাওয়া, হাত ও পায়ে ঝি ঝি করা, অবশ অবশ লাগা বা শক্তি কমে যাওয়া, ব্রেইন স্ট্রোক জনিত হাত ওপায়ের প্যারালাইসিস, মুখের প্যারালাইসিস, রোড ট্রাফিক এক্সিডেন্ট জনিত সমস্যার পুর্নবাসন, জম্মগত প্রতিবন্ধি ও বিকলাঙ্গ শিশুর চিকিৎসা, পেডিয়াট্রিক বা বাচ্চাদের বিভিন্ন সমস্যার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা এবং জেরিয়াট্রিক বা বয়ো-বৃদ্ধদের বিভিন্ন সমস্যার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা, গাইনোকোলজিক্যাল জনিত সমস্যার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা, অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা, স্পিচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি চিকিৎসা, ইন্টারভেনশনাল পেইন ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে মেরুদন্ডের বিভিন্ন নতুন, পুরাতন ও দীর্ঘমেয়াদী ব্যথার চিকিৎসা এবং পেইন ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে হাত ও পায়ের বিভিন্ন জোড়ার ব্যথার চিকিৎসা করা হয়।

প্রফেসর ডাঃ মোঃ আবু সালেহ আলমগীর

বি পি টি, এম ডি, এম পি এইচ, এম ডি এম আর, পি এইচ ডি

বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাএ ব্যাক পেইন ও পাবলিক হেলথ এবং ডিজএ্যাবিলিটি ও রি-হ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ সিনিয়র ফিজিওথেরাপি মেডিসিন কনসালটেন্ট

 

 

Comments

Popular posts from this blog

Prof. Dr. Md. Abu Saleh Alamgir. BPT, MD, MPH, MDMR, PhD. Physiotherapy Medicine & Rehabilitation Consultant

ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা, অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা এবং স্পিচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি চিকিৎসার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা- বি পি আর সি

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবু সালেহ আলমগীর। বি পি টি, এম ডি, এম পি এইচ, এম ডি এম আর, পি এইচ ডি - বি পি আর সি