ব্যাকপেইনের কারন ও প্রতিরোধে করনীয় - বি পি আর সি
ব্যাকপেইনের কারন ও প্রতিরোধে করনীয়
মানবদেহের ঘাড়, পিঠ, কোমড়, নিতম্ব ও লেজের অংশকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যাক বলা হয়। ব্যাকে কোন প্রকার পেইন হলে তাকে ব্যাকপেইন বলা হয়।
শতকরা নব্বই হতে পচানব্বই ভাগ ব্যাকপেইনের রোগী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় ভাল হয়ে যায়। পাচ হতে দশ ভাগ ব্যাকপেইনের রোগীর অপারেশনের প্রয়োজন হয়।
বর্তমান সময়ে ব্যাকপেইন একটি নিরব ঘাতক হিসাবে দেখা দিয়েছে। এমন কোন পরিবার খুজে পাওয়া যাবে না, যে পরিবারে কেউ না কেউ ব্যাক পেইনে আক্রান্ত।
ব্যাকপেইনের কারন সমূহ:
০১. মানবদেহে ৪০-৪৫ বছর পরবর্তী পর্যায়ে মেরুদন্ডের হাড়ে ডিজেনারেটিভ চেন্জ এর কারনে, মেরুদন্ডে নতুন হাড় বৃদ্ধি পেয়ে ব্যাক পেইন হতে পারে।
০২. অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের ফলে, অনেক ক্ষেএে পুষ্টিহীনতা ও ক্লান্তিবোধের কারনে ব্যাকপেইন হতে পারে।
০৩. প্রেগনেন্ট ওমেন বা গর্ভবতী নারীর পোশ্চারাল ভিফরমিটির কারনে ঘন ঘন ব্যাকপেইন হতে পারে।
০৪. কিডনিতে পাথর বা সংক্রমনের ফলে ব্যাকপেইন হতে পারে।
০৫. মেরুদন্ডে অষ্টিওমায়েলাইটিজ রোগের কারনে, হাড়ের মধ্যে ফুলে যাওয়ার ফলে ব্যথার মাধ্যমে ব্যাকপেইন হতে পারে।
০৬. কোন দুর্ঘটনার কারনে মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে, কিংবা মেরুদন্ডে অষ্টিওপোরোসিস এর কারনে কলাপ্স ফ্রাকচার এর মাধ্যমে স্নায়ুর উপর সংকোচনের দ্বারা ব্যাক পেইন হতে পারে।
০৭. পোশ্চারাল ডিফরমিটির কারনে মেরুদন্ডের স্বাভাবিক বক্ররেখা নষ্ট হয়ে মাসেল স্পাজম বা মাসকুলার ইমব্যালেন্স এর কারনে ব্যাকপেইন হতে পারে।
০৮. আপনার বয়স ও কাজের উপর ভিওি করে, অতিরিক্ত চাপের কারনে মেরুদন্ডের ডিস্ক গুলো যা প্রতিটি কশেরুকার মধ্যে ফিট থাকে, তারা কুশনিং ক্ষমতা হাড়িয়ে ফেললে ব্যাকবোনের মধ্যে ঘর্ষনের ফলে ব্যাকপেইন হতে পারে।
০৯. কঠোর পরিশ্রমের ফলে ব্যাকপেইন হতে পারে। ভারী বস্তু উওোলন, বহন, পিঠে টান লাগা, মোচড় লাগা হতে ব্যাক পেইন হতে পারে।
১০. দীর্ঘ সময় ডেস্কে বসে থাকা, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ঘাটা, দীর্ঘ সময় ফ্যান বা এসির নিচে সরাসরি বসে থাকার কারনে মেরুদন্ডের স্ট্রাকচার গুলোর ডিজফাংশনাল জনিত কারনে ব্যাক পেইন হতে পারে।
ব্যাক পেইন দুর করতে কি করবেন:
০১. সর্বপ্রথম ব্যাকপেইন সর্ম্পকে সতর্ক হউন, সচেতন থাকুন এবং ব্যাকপেইন ভীতি দুর করুন।
০২, ব্যাক পেইন দুর করতে বসা, দাড়ানো ও হাটার ক্ষেএে যতটা সম্ভব সোজা হয়ে চলাফেরা করুন।
০৩. বিছানায় শোয়ার সময় প্রয়োজনে কোমড়, হাটু ও পায়ের গোড়ালীর নিচে টাওয়েল ও বালিশ দিন।
০৪. দীর্ঘ সময় কাজ করার ক্ষেএে মাইনাস ডেস্ক ব্যবহার করুন।
০৫. ভারী বস্তু একহাতে বহন করবেন না, প্রয়োজনে দুই হাতে ভাগ করে বহন করুন।
০৬.যানবাহন চালনার ক্ষেএে সোজা হয়ে বসুন এবং প্রয়োজনে লাম্বার করসেট ব্যবহার করুন।
০৭,ব্যাকপেইন হলে আপনার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে বিশ্রাম নিন। ঠান্ডা বা গরম সেক দিন। প্রয়োজনীয় ঔষধ সেবন করুন। শেখানো ব্যায়াম করুন।
০৮. ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত এলোমেলো ব্যায়াম ও সেক আপনার রোগের জটিলতা বাড়িয়ে দিয়ে আপনার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে।
০৯. মনে রাখবেন ফিজিক্যাল মেডিসিন, নিউরো মেডিসিন, নিউরো সার্জারী, অর্থেোপেডিক মেডিসিন, অর্থোপেডিক সার্জারী, জেনারেল সার্জারী, পেইন মেডিসিন বা এ্যানেসথেথিউলোজি , মেডিসিন কনসালটেন্টগন ফিজিওথেরাপি কনসালটেন্ট নন।
১০. আপনার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা একজন ফিজিওথেরাপি কনসালটেন্ট এর তত্বাবধানে গ্রহন করে সঠিক ও পরিপুর্ন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা গ্রহন করে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন।
প্রফেসর ডাঃ মোঃ আবু সালেহ আলমগীর
বিপিটি, এম ডি, এম পি এইচ, এম ডি এম আর, পি এইচ ডি
ব্যাকপেইন, ডিজএ্যাবিলিটি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ সিনিয়র ফিজিওথেরাপি কনসালটেন্ট
চেম্বার: বাংলাদেশ পেইন, ফিজিওথেরাপি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার (বি পি আর সি)
২৬০/৬, ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ বিল্ডং, মালিবাগ মোড়, ঢাকা।
মোবাইল: ০১৬৪১৫৭৬৭৮৭, ০১৭৩৮৩৯৪৩০৯
Comments
Post a Comment