স্বাস্থ্য ও সু-স্বাস্থ্য এর জন্য প্রতিদিন , কি করবেন জেনে নিন। - বি পি আর সি
স্বাস্থ্য ও সু-স্বাস্থ্য
স্বাস্থ্য
কাকে বলে?
স্বাস্থ্য আসলে কি সেটা নিয়ে একবারে এক কথায় উত্তর দেওয়া হয়ত কোনোদিনও সম্ভব নয়। কারণ আমাদের শারীরিক সুস্থতা কিংবা মানসিক সুস্থতা একটি ভালো স্বাস্থ্যের উদাহরণ নাও হতে পারে। সংজ্ঞা প্রদানের মানুষের উপরে ভিত্তি করে এর সংজ্ঞাতেও এসেছে ভিন্নতা। সাধারণ ভাবে বলতে গেলে, একজন মানুষের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক তিন ক্ষেত্রেই - রোগমুক্ত এবং ভালো থাকার অপর নাম হলো স্বাস্থ্য। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, মানসিক অবস্থা, সমাজে সবার সাথে সম্পর্ক, মানসিক চাপ কিংবা প্রশান্তি সব কিছুই স্বাস্থ্যের অন্তর্গত।
WHO (World Health Organisation) সারা বিশ্বের সকলের স্বাস্থ্য নিশ্চয়তায় লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানটি তৈরির পর থেকেই। ১৯৪৮ সালে তারা স্বাস্থ্যকে সংজ্ঞায়িত করেছিলো এই ভাবে-
“স্বাস্থ্য হলো আমাদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতার পূর্ণ সমন্বয় এবং শুধু শারীরিক অসুস্থতার অনুপস্থিতি মানেই সুস্থ থাকা নয়।”
১৯৮৬ সালে তারা আরো যুক্ত করে,“এই কারণে স্বাস্থ্যকে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে সম্পদের মতো দেখতে হবে, জীবনের লক্ষ্য হিসেবে নয়। স্বাস্থ্য হলো একটি ইতিবাচক ধারণা যা সামাজিক সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত উন্নতির পাশাপাশি শারীরিক সক্ষমতার উপর জোর দেয়।” এর অর্থ হলো প্রথম দিকে স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যক্তিগত একটা পর্যায়ে ধারণা রাখা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে সুস্থ থাকার আর স্বাস্থ্যের পুরো ব্যাপারটাই আলাদা। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের পাশাপাশি সমাজে আর দশজন মানুষের সাথে আমাদের সম্পর্ক সবই স্থান পাচ্ছে এই পুরো ব্যাপারটায়।
আমাদের স্বাস্থ্যের
প্রকারভেদ:
স্বাস্থ্যের সংজ্ঞার মতোই এর প্রকারভেদেও ভিন্নতা আছে। অনেকে স্বাস্থ্যকে ভাগ করেছেন ২ কিংবা ৩ ভাগে, আবার অনেকে করেছেন ৫ ভাগে। আবার কোথাও কোথাও তো দেখা যায় ১০ ভাগেও ভাগ করা আছে। নিচে উল্লেখযগ্য ৭ প্রকার স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
1.
শারীরিক স্বাস্থ্য
2.
মানসিক স্বাস্থ্য
3.
সামাজিক স্বাস্থ্য
4.
ইমোশনাল হেলথ
5.
স্পিরিচুয়াল হেলথ
6.
ইকোনমিকাল হেলথ
7.
বুদ্ধিগত স্বাস্থ্য
১.
শারীরিক স্বাস্থ্য:
শারীরিক স্বাস্থ্য বলতে
আমরা
বুঝি
আমাদের
শারীরিক অবস্থা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া, মেটাবলিজম ইত্যাদির সমন্বয়ে শারীরিক স্বাস্থ্য গঠিত
হয়।
শারীরিক সুস্থতার জন্য
জীবনযাপনের ধরণের
পরিবর্তন, ডায়েট প্ল্যান, আমাদের
শরীরে
ডায়েট
প্ল্যানের প্রভাব,
শরীরে
খাদ্যাপাদানের ক্রিয়া,
শ্বসনের জন্য
অক্সিজেন গ্রহণ
ইত্যাদি সব
কিছুই
শারীরিক স্বাস্থ্যের অন্তর্ভুক্ত।
২.
মানসিক স্বাস্থ্য:
আমাদের মস্তিস্কের নানা রকম তথ্য প্রক্রিয়া করার ক্ষমতা, মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা, মানসিক ভারসাম্য, চাপ গ্রহণের ক্ষমতা ইত্যাদির উপরে মানসিক স্বাস্থ্য নির্ভর করে। অনেক সময়ে আমাদের ইমোশনাল হেলথকেও মানসিক স্বাস্থ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আবার অনেকেই একে আলাদা হিসেবেও দেখে থাকেন। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের মুল আলোচনা আমদের আচরনগত বিষয়গুলোর উপর। দুশ্চিন্তা, নানা রকমের মানসিক রোগ ইত্যাদিও মানসিক স্বাস্থ্যের আলোচ্য বিষয়।
৩.
সামাজিক স্বাস্থ্য:
সমাজে মানুষের সাথে আমাদের সম্পর্ক, নানা রকমের সামাজিক অনুষ্ঠানে আমাদের অংশগ্রহণ ইত্যাদি আমাদের সামাজিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের জন্য দরকারি। পরিবারের অন্যান্যদের সাথে একে অপরের সম্পর্ক ইত্যাদিও এর সাথে সম্পর্কিত। অনেকে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন কিন্তু সামাজিক স্বাস্থ্যও একই সাথে একই রকমের গুরুত্বপূর্ণ।
৪.
ইমোশনাল হেলথ:
ইমোশন কিংবা অনুভূতিগত স্বাস্থ্যের সাথে মানসিক স্বাস্থ্যের কিছুটা মিল থাকলেও দুইটির মাঝে বেশ কিছু পার্থক্যও রয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য মানুষের আচার আচরনের দিকে বেশি নজর দিলেও, আনুভুতিগত স্বাস্থ্যের মুল আলোচ্য বিষয় অন্যরকম। একটা মানুষ তার নিজের ভিতরে কেমন অনুভূত করছে, তার মনস্তাত্বিক অবস্থা কেমন, মানুষটা আশাবাদী নাকি হতাশাবাদী ইত্যাদি নানা ক্ষেত্র ইমোশনাল হেলথে উঠে আসে। রাগ নিয়ন্ত্রণ, নানা রকম ভীতি কাটানো ইত্যাদি এর আলোচ্য বিষয় হতে পারে।
৫.
স্পিরিচুয়াল হেলথ:
এর অপর নাম দেওয়া যায় আত্মিক স্বাস্থ্য। একটা মানুষের বিশ্বাস, মুল্যবোধ, নিজস্ব নীতিবোধ ইত্যাদি স্পিরিচুয়াল হেলথ এর অনর্ভুক্ত। স্পিরিচুয়াল হেলথ ঠিক থাকলে আমাদের মনে প্রশান্তি আসে, আমাদের কাজের উদ্দীপনা তৈরি হয় এবং মানুষ হিসেবে নিজেকে স্বার্থক মনে হয়। যার ফলে আমাদের অনুভুতিগত এবং মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে।
৬.
ইকোনমিকাল হেলথ:
ইকোনমিক্যাল হেলথ কিংবা অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য আসলেই কি স্বাস্থ্যের প্রকার কি না তাতে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু এখন অনেকেই একে স্বাস্থ্যের প্রকারে অন্তর্ভুক্ত করে। এর কারণ হলো, বর্তমান সময়ে আর্থিক লেনদেন ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব না। চিকিৎসা থেকে খাদ্য সব জায়গাতেই টাকা দরকার। আবার অভাব নানা রকমের মানসিক চাপ তৈরি করে, এ থেকে হৃদরোগের মতো অসুখেরও জন্ম দিতে পারে। তাই অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা নানা রকম সমস্যা থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করতে পারে।
৭.
বুদ্ধিগত স্বাস্থ্য:
ইন্টালেকচুয়াল হেলথ কিংবা বুদ্ধিগত স্বাস্থ্য আমাদের কোনো কিছু শিখা, মনে রাখা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সব গুলো ক্ষমতাই হ্রাস পায় আবার চর্চার মাধ্যমে এগুলোর পরিচর্যাও করা সম্ভব।
স্বাস্থ্যকে আমরা নানা ভাবে ভাগ করতে পারি। কিন্তু তা আমরা যেভাবেই করি না কেনো প্রতিটি ক্ষেত্রই কম গুরুত্বপুর্ণ নয়। আমাদের উচিৎ আমাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া। স্বাস্থ্যশিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান, হাইজিন নিয়ে ধারনা ইত্যাদি ভালো পদক্ষেপ হতে পারে।
স্বাস্থ কে
সুস্থ রাখার ১৫টি সহজ উপায়
গবেষণায় দেখা গেছে, আজীবন সুস্বাস্থ্যের গোপণ চাবিকাঠি হল ‘লাইফস্টাইল মেডিসিন’। যা খুবই সহজ। কেবলমাত্র আপনার ডায়েটে কিছু স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনুন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন। সেই সঙ্গে কীভাবে নিজেকে স্ট্রেস ফ্রি রাখতে পারবেন সেটা শিখুন।
আপনার সুস্বাস্থ্য (Healthy lifestyle) কীভাবে বজায় রাখবেন তার সঠিক পদ্ধতি বেছে নেওয়া জরুরি। সেটা আদর্শগতভাবে আত্ম-আবিষ্কার এবং শেখার যাত্রা হওয়া উচিত। পড়ুন এবং দেখুন কোনটি আপনার জন্য কার্যকরী।
v ব্যায়াম
v মেডিটেশন
v টোব্যাকো বা তামাকজাতীয় জিনিস থেকে দূরে থাকুন
v ঘরে রান্না করুন এবং বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন
v মাঝেমধ্যেই বাইরে যান এবং স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের সাথে মেলামেশা করুন
প্রফেসর ডাঃ
মোঃ আবু সালেহ আলমগীর
বি পি টি,
এম ডি, এম পি এইচ, এম ডি এম আর, পি এইচ ডি
কনসালটেন্ট
ও বিভাগীয় প্রধান
ফিজিওথেরাপি
মেডিসিন এন্ড রি-হ্যাবিলিটেশন বিভাগ
সাফা – মারওয়া
হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার
যাএা বাড়ী
মোড়, ঢাকা
মোবাইলঃ ০১৬৪১৫৭৬৭৮৭,
০১৭৩৮৩৯৪৩০৯
Comments
Post a Comment